ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী সহিংসতায় চাঁদপুরে মৃত্যু বেড়ে ৩

পঞ্চম ধাপে (৫ জানুয়ারি) ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চাঁদপুরের কচুয়া ও হাইমচরে দুই জনের পরে মিজান গাজী নামে আরেক ব্যাক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন। যার ফলে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩জনে। শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে মিজান গাজী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

এর আগে কচুয়া উপজেলার ১ নম্বর সাচার ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে নয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রতিপক্ষ প্রার্থীর সমর্থকের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত শরীফ নামে যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকাল ৩টায় শরীফুল ইসলাম গুরুতর আহত হলে তাকে ঢাকার ধানমন্ডি ইসলামিয়া হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শরীফুল ইসলাম সাচার বাজারে কাচঁমালের ব্যবসা করতেন।

নিহতের চাচা রাসেল ও আবুল হোসেন জানান, বুধবার ৩টার দিকে মেম্বার প্রার্থী আব্দুর রবের সমর্থকরা ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে অপর মেম্বার প্রার্থী জাকির হোসেনের (বিজয়ী) পক্ষে ভোট কেন্দ্র দখল করার চেষ্টাকারীদেরকে বাঁধা দিলে হাতিরবন্দ গ্রামের শহিদ উল্লার ছেলে শরীফুল ইসলামকে প্রতিপক্ষরা তার পেটে ছুরিকাঘাত করে। ঘটনার পরপরই শরীফুল ইসলামকে মূমুর্ষ অবস্থায় ধানমন্ডি ইসলামীয়া হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

এছাড়া ৫ জানুয়ারি হাইমচর উপজেলা ৪ নং নীলকমল ইউনিয়ন বুধবার ইউপি নির্বাচনে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনী সহিংসতায় শরীয়তপুরের পালং থানার মীর হোসেন (৪০) ব্যাক্তি নিহত হয়েছেন।

ওই ভোট কেন্দ্রে ৩.২০ মিনিটের সময় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মীর হোসেনের মৃত্যু হয়।

নিহত মীর হোসেন শরীয়তপুর জেলার পালং থানার সোনামুখি গ্রামের ইরফান বেপারীর পুত্র। মীর হোসেন পালং থানার রড সিমেন্টের ব্যাবসায়ী।

হাইমচর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, নির্বাচন এর দিন দুই প্রার্থীর সংঘর্ষে মীর হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে, নির্বাচনের দু’দিন পর শুক্রবার হাইমচর উপজেলার আলগী উত্তর ইউনিয়নে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষের সময় ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন মিজান গাজী (৫০) নামে এক ব্যক্তি। তিনি ওই ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের বিঙ্গুলিয়া গ্রামের গাজী বাড়ির মৃত শাহাদাত গাজীর ছেলে। পেশায় ট্রাকচালক ছিলেন।

নিহতের স্বজনরা জানান, নির্বাচনের দিন দুপুরে দুই নম্বর ওয়ার্ড জমিলিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ইউপি সদস্য প্রার্থী তালা ও মোরগ মার্কার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় তিনি ভোট দিতে গিয়ে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে ইটের আঘাতে গুরুতর আহত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি আজ মৃত্যুবরণ করেন।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

চাঁদপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। মডেল থানায় কোনো মামলা হয়নি । যেহেতু ঘটনাস্থল হাইমচর থানায় সেখানেই মামলা হবে।

হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান মোল্লা বলেন, হাসপাতালে মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জেনেছি। মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে অভিযোগ আসলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সর্বশেষ - চাঁদপুর

জনপ্রিয় - চাঁদপুর