বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ফলে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের আজীবন রেশনের আওতায় আনার কাজ চলছে বলেও জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ফায়ার সার্ভিসে জনবল ছিল ছয় হাজার ১৭৫ জন। এখন এটা ১৩ হাজার ৪০০ জনে উন্নীত হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জনবল ১৬ হাজার ছাড়িয়ে যাবে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাক্রমে প্রতিষ্ঠানটির জনবল ২৫ হাজারে উন্নীত করার কাজ চলছে।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর মিরপুর ১০নম্বরে অগ্নি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ ২০২১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিটি দেশেই ফায়ার সার্ভিসের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও তার ব্যতিক্রম নয়। এজন্যই সরকার ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় দেশে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ছিল ২০৪টি, আর বর্তমান স্টেশন আছে ৪৫৬টি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমাদের সরকারের প্রতিজ্ঞা ছিল প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন গড়ে তুলবে। তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। শুধু উপজেলাই নয়, যেখানে আমাদের প্রয়োজন সেখানেই আমরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করবো।
আমাদের শিল্প যেভাবে প্রসারিত হচ্ছে সেগুলোকে রক্ষণাবেক্ষরণের জন্য বিশেষ বিশেষ ফায়ার স্টেশন বিভিন্ন জায়গায় তৈরি করা হচ্ছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খুব শিগগির আরও ১০৯টা ফায়ার সার্ভিস স্টেশন চালু হবে। এর ফলে মোট স্টেশন দাঁড়াবে ৫৬৫টি। চট্টগ্রাম বন্দর ও শিল্প নগরী এলাকা, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় ১১টি আধুনিক ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কাজ চলছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের গ্যাপ এরিয়াগুলোতে ১৫৫টি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করার তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা ৭২০টি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের লক্ষ্যে কাজ করছি। ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে পা রাখার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
‘বাহিনীটির আরও কর্মক্ষম করতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরইমধ্যে এক হাজারের বেশি কর্মীকে দেশের বাইরে থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’
তবে মুন্সীগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ হলে আর কাউকে বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হবে না বলেও আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় ১০০.৯২ একর জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ পর্যায়ে। এখানে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের আজীবন রেশনের আওতায় আনার কাজ চলছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, দেশকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার জন্য ফায়ার সার্ভিসসহ সবারই কাজ করা আবশ্যক। সকল উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্র স্থাপন প্রায় শেষের দিকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন।