মহা দুর্গোৎসব
বনানী সিনহা
দুর্গা পূজা হলো হিন্দু ধর্মালম্বীদের একটি অন্যতম ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব।দেবী মা দুর্গার উদ্দেশে যে পূজা করা হয় সেটাশারদীয়া দুর্গা পূজা নামে সর্বত্র প্রচলিত। এই পূজা সাধারণত অনুষ্ঠিত হয় বাংলা আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে ষষ্ঠ থেকে দশম দিনপর্যন্ত আর এই দিন গুলো যথাক্রমে ষষ্ঠী,সপ্তমী, অষ্টমী,নবমী এবং বিজয়াদশমী।পূজা মানেই আনন্দ আর তাই কিছু মাস আগেথেকেই চলে দেবী গড়ার ও পূজার প্রস্তুতি। পূজো আসতেই মনে প্রাণে, আকাশে বাতাসে, চারিদিকে যেন একটা প্রশান্তি ও শুদ্ধতারআভাস বিরাজ করে। মন্দিরে মন্দিরে সবার মধ্যে চলে মায়ের অপরুপ রুপকে আরও বৃদ্ধি করার প্রতিযোগিতা ।নতুন জামাকাপড়, শাড়ী গহনা, ফুলের সুগন্ধ, দেবীর সাজসজ্জা, আরাধনা, চন্ডীপাঠ, মহা আরতি, অঞ্জলি , ধুনুচি নাচ, মূর্তি দর্শন, প্রসাদখাওয়া, প্রিয়জনের কাছে যাওয়া, প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করা, ছুটি নেওয়া, জমিয়ে আড্ডা সব যে পূজোর জন্যই। বিজয়াদশমীতেসধবা নাড়ীরা দেবী দুর্গাকে সিঁদুর দিয়ে একে অন্যে মেতে উঠে সিঁদুর খেলায় আর সেইসাথে যুক্ত হয় মিষ্টিমুখ করা,দশমীর মেলাও গুরুজনের আর্শিবাদ নেওয়া। মনরোম প্রকৃতির সাথে কাশফুলের দোলায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠে সকলের দেহ মন।দুর্গোৎসববাংলাদেশ ও ভারতবর্ষ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশেও আয়োজিত হয়ে থাকে।দুর্গাপূজাকে বড় পূজাও বলা হয় কারন এই পূজাহিন্দুদের হলেও আমরা জাতি, ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে যোগদান করে পূজাকে একটা মহাউৎসবে পরিনত করি। বিশ্ব মহামারী করনাভাইরাসের কারনে গতবারের মত এবারো কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।বিঘ্নহর্তা দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গা যেন সমগ্র পৃথিবীর মানুষকেভয়াবহ মহামারী থেকে মুক্তি দেন আর যারা প্রাণ দিয়েছেন তাদের যেন মা পাপ মুক্তো করে শান্তিতে রাখেন।এসেছে শরৎকালতাই দেবী দুর্গা মাকে চল সকলে মিলে বরণ করি আর সেইসাথে সবাই সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। দুর্গা মা আছেনসর্বত্রই আর তাই মাকে মনে প্রাণে আরাধনা করে যতটা সম্ভব নিরাপদে থেকে আসুন সকলে মিলে মায়ের রুপ দর্শন করি। জয়মা দুর্গা, জয় মা জয়। মা তুমি তোমার সন্তানদের সমস্ত রোগ শোক বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করো। সকলের পূজা সুন্দর সুখের ওনিরাপদ হোক। এই কামনায় দুর্গা উৎসবের উদ্দেশে আমি সকলের জন্যে একটি কবিতা নিবেদন করছি।
জয় মা দুর্গা
বনানী সিনহা
জানাই আমি সকলকে শারদীয়া শুভেচ্ছা
জগৎ জননী মা দুর্গা তুমি পূরাও সন্তানের ইচ্ছা।
শরৎ এলো শিউলি ফুলের মনমাতানো সুবাসে
মায়ের আগমনী বর্তায় খুশিতে মাতে চারিপাশে।
ঢাকের বাদ্য ধূপের ধোঁয়া উলু শঙ্খের ধ্বনি
মায়ের অপরূপের আলোই দূর হোক ব্যাধি গ্লানি।
নতুন শাড়ী নতুন সাজে করি তোমায় নিমন্ত্রণ
হিংসা বিদ্বেষ দ্বন্দ্ব ভুলে মহাউৎসবে ভরি মন।
শুধু হিন্দু নয় সকল জাতির হিতে,হে মা তুমি
অশুভের নাশকারী তুমি যে অন্তরযামি।
বিগ্নহর্তা মঙ্গলময়ী তুমি মা দূর্গতিনাশিনী
জাতী ধর্ম ভুলে উৎসবে মাতি ওমা জননী।
মহালয়া থেকে নবমী করি দেবীর আরাধনা
দশমীতে গমন হলেও, মা সাথে করি কামনা।
বিজয়ার সিঁদুর দেই মা তোমার চরণে
সুখ শান্তির পরশ দিয়ে থেকো মা স্মরণে।
শুভ হোক কল্যাণ হোক এবারের পূজা
অঞ্জলি নিবেদিতা আমি, জয় মা দশভুজা।
রচিত- ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ নিউইয়র্ক ।