ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেড় ঘণ্টায় ৫১ মামলা নিষ্পত্তি: বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৃতীয় আদালতে দেড় ঘণ্টায় ৫১টি মামলার নিষ্পত্তি করে রেকর্ড করা বিচারক মো. সালাহউদ্দীনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল লতিফ।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে একজন আইন কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি জেলা জজের দৃষ্টিতে আনা হবে। কেননা একসঙ্গে এতগুলো মামলার রায় বিচারক মো. সালাউদ্দীন দিতে পারেন না। কীভাবে তিনি এতোগুলো মামলার রায় দিলেন, সেটার জবাবদিহিতা তাকে দিতে হবে। এখানে সাক্ষীর ব্যাপার রয়েছে। অবশ্যই যোগাযোগের মাধ্যমে এই রায় দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

উল্লেখ্য, প্রতারণা, চুরি, যৌতুক, মারামারিসহ বিভিন্ন অভিযোগের ৫১টি মামলা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। মঙ্গলবার মাত্র দেড় ঘণ্টায় বিচারক মো. সালাহউদ্দীন এসব মামলার রায় ঘোষণা করেন। এর মধ্যে ৮টি মামলায় আসামিদের সাজা এবং বাকি ৪৩টি মামলায় আসামিদের খালাস প্রদান করেন তিনি।

এদিকে এমন ঘটনাকে নজিরবিহীন ও ইতিবাচক হিসেবে উল্লেখ করে আইনজীবীরা জানান, ইতোপূর্বে কখনো একদিনে সাতক্ষীরার কোনো আদালতে অর্ধশতাধিক মামলার রায় ঘোষণা হয়নি। তবে সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. সালাহউদ্দীন মঙ্গলবার প্রকাশ্যে দেড় ঘণ্টায় ৫১টি মামলা নিষ্পত্তি করে আইনজীবীসহ বিচারপ্রার্থী মানুষদের নজর কেড়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. সালাহ উদ্দীনের আদালতে মঙ্গলবার রায় ঘোষণার জন্য প্রস্তুত রাখা হয় ৫৭টি মামলা। তবে আদালত চলাকালীন সময়ে এসব মামলার মধ্যে ৫১টি মামলায় রায় ঘোষণা করেন তিনি। এসবের মধ্যে ৮টি মামলায় আসামিদের সাজা এবং বাকি ৪৩টি মামলার আসামিদের খালাস প্রদান করেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ মোড়লের স্ত্রী সাবরিনা খাতুন, একই উপজেলার চণ্ডিপুর গ্রামের আবুল গাজীর স্ত্রী হামিদা খাতুন, পাটকেলঘাটার আহসান নগরের মুছা শেখের ছেলে নূর ইসলাম, একই থানার কুমিরা গ্রামের মোজাফফর মুন্সির স্ত্রী ফারুবা মুন্সি, পুরাতন সাতক্ষীরার আরোঙ্গজেবের ছেলে আবু শাহীন শাহজাহান সরদার, বরিশাল জেলার মুলালী থানার আলিমাবাদ গ্রামের মোদাদেচ্ছর হোসেনের ছেলে সরোয়ার হোসেন, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কুযারিয়া গ্রামের কামরুজ্জামানের ছেলে অহিদুজ্জামান ও খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা থানার পরানপুর গ্রামের কাশেম শেখের ছেলে হাবিবুর রহমান শেখ।

উল্লেখ্য, বিচারক মো. সালাহউদ্দীন গত ৫ ডিসেম্বর সাতক্ষীরা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর একটি মাদক মামলায় প্রবেশন আইনের আওতায় এক আসামির দেওয়া সাজা স্থগিত করে নিজ বাড়িতে পারিবারিক পরিবেশে থেকে সংশোধন হওয়ার সুযোগ দিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।

সর্বশেষ - সারাদেশ

জনপ্রিয় - সারাদেশ