অপরাজনীতির অপশিক্ষা ও কিশোর গ্যাং
———————————————————আজম পাটোয়ারী———————————————————
আমরা জানি ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে একটা মানুষ আইনত বিবাহ করা যোগ্যতা অর্জন করতে পারে না। আবার কেউ যদি কোন দেশের নাগরিত্বের জন্য এনআইডি নিতে চায় তাহলেও তাকে যোগ্যতা হিসাবে ১৮ বছর বয়স হতে হয়।। তাহলে আমরা একটা জিনিস দেখতে পাই সকল ক্ষেত্রে একজন মানুষের ১৮ বছর বয়সকে সাবালক হিসাবে গন্য করা হয় এবং তাকে একজন পরিপক্ক মানুষ রুপে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু অত্যান্ত বেদনার চিত্র আমাদের দেশের স্কুল কলেজে যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা রাজনীতিতে করে তাদের দিকে খেয়াল করলে দেখবেন বেশির ভাগই ১৮ বছর বয়সের কম কিংবা তারও নিচে তবে এখানে প্রশ্ন কিভাবে তারা রাজনীতি করে? আর কোন আইনের তারা রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে কিভাবে যোগদান করতে পারে, ঠিক বোধগম্য নয়? আবার তাদের দেখা যায় রাজনৈতিক নেতাদের হয়ে রাস্তায় কিভাবে চামচামি করে মানুষকে অহেতু হয়রানী করে বেড়ায়? আজ আমাদের এই কোমলমতি শিশুরা রাজনৈতিক নেতাদের হয়ে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে তার সুন্দর জীবনটাকে নষ্ট করে ফেলছে এবং সেই সাথে তাদের হাত ধরে গড়ে উঠছে এলাকা মহল্লায় কিশোর গ্যাং। আজ অপরাজনীতির কারনে ছোটরা বড়দেরকে সম্মান করে না আর বড়রাও ছোটদের স্নেহ করার কথা ভুলে গেছে। এমন কি স্কুল -কলেজের শিক্ষকদেরও তারা আজ সম্মান করে না। এই অবস্থায় আমরা কি একবারও চিন্তা করেছি কোন পথে হাটছে আগামির অপার সম্ভাবনা। আমাদের বেখেয়ালিপনা আর খামখেয়ালির কারনে চোখের সামনে নষ্ট হতে বসেছে নিজেদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, অথচ সে দিকে আমাদের কোন ভুক্ষেপই নেই। আমরা এই বর্তমান সর্বাধুনিক সময়ে দাড়িয়ে সম্মান জিনিসটা যে কি সেটাই ভুলতে বসেছি এই অপরাজনীতি নামের অপশিক্ষার কারনে। এই রাজনীতির কারনে আমরা নিজেদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষমতা অনুভব করি যা সকল শিক্ষাকে এক নিমেষে নষ্ট করে দিচ্ছে। তাই অতি দ্রুততার সাথে এই বিষয়ে সকল দায়িত্বশীল মানুষদের পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার এবং এখানে একজন দায়িত্ববান রাজনৈতিক নেতার উচিত কারা মিছিল মিটিং সমাবেশে লোকজন নিয়ে আসে তাদের ব্যাপারে সচেতন নজর রাখা। কোন রাজনৈতিক নেতা তার আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাতে ১৮ বছরের নিচে কেউ অংশগ্রহণ না করে সে বিষয় কড়াকড়ি আরোপ করা। প্রয়োজনে আইনত নিষিদ্ধ ও অপরাধ হিসেবে শাস্তির ব্যবস্থা করা। সরকারের এই বিষয়ে এখনই সজাগ দৃষ্টি দেয়া উচিত বলে আশা রাখি এবং ১৮ বছরের নিচের কেউ যেন রাজনীতির এর সাথে কোন ভাবে জড়িয়ে না পড়ে এবং জড়িয়ে পড়লে তাকে আইনত ব্যবস্থার মাধ্যমে সুন্দর পথে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কঠোর হওয়া উচিত। এই বিষয়ে দেশের সচেতন টিভি মিডিয়াগুলোর উচিত টকশো এর ব্যবস্থা করে মানুষকে সচেতনতার বার্তা পৌছে দেয়া যা খুবই ভালো ও ফলপ্রসু হবে বলে বিশ্বাস রাখি। আজ আমাদের সমাজের যে বীজ গুলো এক সময় সোনার ফসলে পরিনত হওয়ার কথা কিন্তু সেই ফসল ফলার আগেই তা অপরাজনীতি নামক ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুপ্ত অবস্থাতেই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে,যা আমাদের জন্য সুখকর নয় বরং ভবিষ্যতের জন্য নিদারুন বেদনার। তাই এখনও সময় আছে যারা বিপথগামি হয়নি কিংবা ফিরিয়ে আনা সম্ভব এই রাজনীতির কালো ছোবল থেকে তাদের প্রতি সবাই যত্নশীল হয়ে কিশোর অপরাধ সহ সকল অনৈতিক কাজ থেকে তাদের রক্ষা করা এবং প্রতিকারে খুব দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।