ঢাকা, সোমবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্বজনদের কাছে ফিরলো আফগানিস্তানে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটি

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর দেশ ছেড়ে পালাতে থাকেন বহু মানুষ। ৩১ আগস্টের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সেনা প্রত্যাহারের সময় বহু আফগানও তাদের সঙ্গে দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেন। সেই সময়কার একটি মর্মস্পর্শী ঘটনা নাড়া দেয় গোটা বিশ্বকে।

আফগান দম্পতি মির্জা আলি আহমাদি ও সুরাইয়া, ১৯ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের বাইরের জনসমুদ্রে যখন অসহায়ভাবে পাঁচ সন্তানকে নিয়ে ছোটাছুটি করছিলেন, তখন তাদের কোলে ছিল দুই মাস বয়সী সন্তান সোহাইল আহমাদি। ঠিক সেই মুহূর্তে উঁচু প্রতিরক্ষা বেষ্টনীর বাইরে থেকে এক মার্কিন সেনা যখন জিজ্ঞেস করেন, সাহায্য লাগবে কিনা। ভিড়ের মধ্যে সন্তানকে আহত হওয়া থেকে বাঁচাতে ওই মার্কিন সেনার হাতেই ছোট্ট শিশুটিকে তুলে দেন তারা। যেহেতু বেড়ার ওপাশের জায়গাটা ছিল মাত্র ৫ মিটার দূরে, তাই আফগান দম্পতি ভেবেছিলেন খুব শিগগির নিজেরাও সেখানে পৌঁছাতে পারবেন। কিন্তু এরপর আর কোলের সন্তানকে খুঁজে পাননি তারা।

স্বজনদের কাছে ফিরলো আফগানিস্তানে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটি

অবশেষে কয়েক মাস পর সন্তানকে খুঁজে পাওয়ার সুখবর পেলেন তারা। স্থানীয় সময় শনিবার (৮ জানুয়ারি) শিশুটিকে তার স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, শিশুটি কাবুলে ছিল যেখানে হামিদ সাফি নামে একজন ২৯ বছর বয়সী ট্যাক্সিচালক তাকে বিমানবন্দরে খুঁজে পেয়েছিলেন এবং নিজের মতো করে বড় করতে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন।

স্বজনদের কাছে ফিরলো আফগানিস্তানে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটি

সাত সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা ও আবেদন করার পরিপ্রেক্ষিতে এবং তালেবান পুলিশ তাকে আটকের পর, সাফি অবশেষে শিশুটিকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে রাজি হন।

সাফি সোহাইলকে বিমানবন্দর এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পান। তার বাবা-মাকেও খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন তাকে বাড়ি নিয়ে যাবেন। তার ঘরে তিন তিন কন্যা রয়েছে। তিনি ভেবেছিলেন, যদি শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজে না পান তাহলে তাকে নিজের কাছে রেখেই বড় করবেন।

স্বজনদের কাছে ফিরলো আফগানিস্তানে হারিয়ে যাওয়া সেই শিশুটি

শিশুটির বাবা মির্জা আলি আহমাদি আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। আহমাদি জানান, তিনি পাগলের মতো তার সন্তানকে খুঁজতে থাকেন। কিন্তু তাকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পরে তাকে উদ্ধার করে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

দেশ ছাড়ার পর তারা টেক্সাসে ছিলেন। এরপর সন্তান কোথায় সে সম্পর্কে তাদের কোনো ধারণা ছিল না। এসময় কেউ বলতে পারছিল না শিশুটি আসলে কোথায়।

শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া এবং স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে এখনও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র: রয়টার্স

সর্বশেষ - আন্তর্জাতিক

জনপ্রিয় - আন্তর্জাতিক