স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুর জেলায় সরকারিভাবে নেই কোন বৃদ্ধাশ্রম। এমনকি ছিন্নমূলদের থাকার কোন আশ্রম বা নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই যেখানে ভূমিহীন, পরিবারহীন মানুষরা থাকতে পারে। খাবার খেতে পারে। জীবনের বাকিটা সময় স্বাচ্ছন্দে কাটাতে পারে। শুধু চাঁদপুর শহরেই নয়, মতলব দক্ষিণ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে বহু ভবঘুরে মানুষ। এদের কোন ঠিকানা নেই, পরিবার নেই। নিঃস্ব, কর্মহীনভাবে রাস্তাঘাটেই পার করে দিচ্ছে জীবন। এদের দেখার কেউ নেই। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনরা বা স্থানীয়রা খাবার দিলে খায়, না হয়- না খেয়েই থাকে দিন কাটিয়ে দেয়। অনেকে আবার ডাস্টবিন থেকে উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে বেঁচে থাকার যুদ্ধ করছে। চাঁদপুর কোর্টস্টেশনে জনৈক বৃদ্ধ এক ব্যক্তি কাঁথা মুড়ো দিয়ে শুয়ে থাকে সারাদিন। হাজার হাজার মানুষ এই স্টেশনে আসা যাওয়া করছে। দেখছে বৃদ্ধ লোকটির শুয়ে থাকার দৃশ্য। পাশেই কুকুর ঘেষে রয়েছে। মাঝে মাঝে তার কিনারে খাবার দেখা যায়। হয়তো কেউ মায়া করে খাবার দিয়ে যায়। তা খেয়ে ঘুমিয়ে পরে। এখানেই ঘুম, এখানেই ত্যাগ। চাঁদপুর সদর মডেল থানায় ঢুকতে এক বৃদ্ধ মহিলা সারাদিন শুয়ে বসে থাকে। আর বিলাপ করে কি যেন। এই রোড দিয়ে রেজিস্ট্রি অফিসের ও থানায় হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। সামনেই রয়েছে হাসপাতাল ও স্কুল। বহু রোগীরা ও স্কুলগামী ছাত্রীরা যাতায়াত করছে। বিলাপ করতে থাকা মহিলাটি স্কুল ঘেষে যেখানে থাকে সেখানে খায় আবার সেখানে মল ত্যাগ করছে। ফলে পরিবেশ হয়ে উঠছে ভারী, নোংরা, বিপদজনক। পথচারীরা নাকে হাত দিয়ে চলাফেরা করছে। অথচ মহিলাটিকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। কারন চাঁদপুর জেলায় যে এমন কোন আশ্রম নেই, যেখানে তাকে পুনর্বাসন করা যায়। দয়া-মায়াবান মানুষরা খাবার দিয়ে যায় – এটুকুই। এদিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন ভাসমান বৃদ্ধ, মহিলা-পুরুষ দেখা যায়। যারা পুরোই নিঃস্ব, পরিবারহীন একেকটি জীবন। তাদের নিয়ে পুনর্বাসন করা যেতে পারে। তাহলে পরিবেশ নোংরা হবে না। নিঃস্ব এই ব্যক্তিরাও বাকিটা জীবন স্বাচ্ছন্দে থাকতে পারবে। কিন্তু সরকারি বা সেবরকারিভাবে এমন কোন উদ্যোগ নেই। শহর সৌন্দর্যকরনের যে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছেন জনপ্রতিনিধিরা, অন্তত সে জন্য হলেও একটি পুনর্বাসন বা বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করে এমন ভবঘুরে নিঃস্ব মানুষদের চিহ্নিত করে একত্র করাটা জরুরী বলে মনে করছেন জনগণ।