চাঁদপুর শহরের প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত রেলওয়ে কোর্টস্টেশ এলাকার গেটম্যান গেট ঘরে তার দায়িত্ব অবহেলা করে গেইট ঘরের ভিতরে আপন মনে অতি আরামের সাথে ঘুমাচ্ছিলেন। বুধবার (১৬ মার্চ) ভোর ৫টা ৩মিনিট। ওই সময় শহরের বড় স্টেশন থেকে আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কোর্ট স্টেশনে প্রবেশ করতে শুরু করে। হঠাৎ নজরে আসে কোর্ট স্টেশন এলাকার রেলওয়ের লাইসেন্সকৃত ব্যবসায়ী আমিনুল হক আমিনের। তিনি তাৎক্ষনিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তার দোকান থেকে লাফিয়ে নেমে এক এক করে দুটি গেট ব্যারিয়ার নামিয়ে গেটটি বন্ধ করে দেন। এতে ঘটনাস্থলে থাকা অসংখ্য যানবাহন, পথচারী ও মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনে থাকা শত শত যাত্রী নিয়ে অল্পের জন্য রক্ষাপেল যাত্রী।
এ ঘটনাটি চাঁদপুর কোট স্টেশন মাস্টারের সাথে যোগাযোগ করে তার দপ্তরে থাকা স্টেশনের সিসি ক্যামেরায় দেখে ঘটনাটি ধারণ করা রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে জরুরিভাবে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে এখানে বড় ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে বলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, চাঁদপুর-চট্টগ্রামের মধ্যে নিয়মিত চলাচলকারী আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুধবার সকাল ৫টায় চাঁদপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে শহরের কোর্টস্টেশনে প্রবেশ করছিল। তখন গেটম্যান দাদন মিয়া ওরফে দাদু গেটম্যানের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় গেট ঘরে ভিতরে ঘুমাচ্ছিল। গেটম্যান তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে ছিল। সে ঘটনা যদি ঘটতো তাহলে চাঁদপুর কোর্টস্টেশন এলাকায় রক্তের বন্যা হত। শত শত মানুষ হতাহতের সম্ভাবনা ছিল। ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়তো। একই সাথে স্টেশন এলাকায় থাকা অসংখ্য যানবাহন দুর্ঘটনায় পতিত হতো।
স্থানীয়রা বলেন, খোদার অশেষ মেহেরবানীতে ব্যবসায়ী আমিনুল হক আমিনের মানবিকতায় ও তার হস্তক্ষেপে রক্ষা পেল চাঁদপুর-লাকসাম-চট্রগ্রামের মধ্যে চলাচলকারী আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
এ ঘটনার পর গেটম্যানের দায়িত্বে থাকা দাদন মিয়া জানান, আমি টয়লেটে থাকা অবস্থায় ট্রেনটি প্রবেশ করায় আমার কাজের গাফিলতি হয়েছে। আমি রেলওয়ের লাইসেন্সকৃত ব্যবসায়ী আমিনুল হক আমিনের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এ ধরনের ভুল আর হবেনা।
ব্যবসায়ী আমিনুল হক আমিন জানান, আমি হঠাৎ করে দেখি ট্রেনটি আসতেছে। আমি লাফিয়ে দোকান থেকে নেমে গেট ব্যারিয়ার দুটি ফেলে গেট বন্ধ করে দিই। তা নাহলে বড় ধরণের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল। এখানে ভাল মানের লোক দেওয়া প্রয়োজন। বিগত দিনেও এ ধরনের ঘটনা অনেকবার ঘটেছে।
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা লিয়াকত আলী মজুমদার মুঠো ফোনে জানান, তিনি আজকের এই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তাকে এই বিষয়ে অবগত করেননি। এই বিষয়ে তিনি জেনে গেটের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এদিকে, এ কোর্ট স্টেশন এলাকায় গেটম্যান মফিজুর রহমান মফিজ তার দায়িত্ব পালন কালে বহুবার বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে ছিল। শুধুমাত্র কমিউনিটি পুলিশ সদস্য সোহেল গাজী, ভুট্ট, নাইট গার্ড সেলিম গাজীসহ এলাকার দোকানদারদের হস্তক্ষেপে দুর্ঘটনাগুলো থেকে রক্ষা পেয়েছে। মফিজ এখন রয়েছে মিশন রোড গেটে। সেখানে মফিজুর রহমান মফিজ ও শংকর গেট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী ও কাচাঁ বাজার দোকানদারদের কাছ থেকে প্রতিদিন চটি প্রতি ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ব্যবসায়িরা জানান, আমরা শাহী মসজিদকে ১০টাকা ও গেট ম্যানকে ২০টাকা করে দিয়ে থাকি। এতে করে ২৫ থেকে ৩০জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮শ’ টাকা উত্তোলন করেন তারা।