অবশেষে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের আমিন দম্পতি খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই। গত ৪ মাস পূর্বে নিজ বাড়িতে খুন হন এই দম্পতি। চুরি যাওয়া মোবাইলের সূত্র ধরে খুনিকে শনাক্ত করা হয়। উদ্ধার করা হয় খুনে ব্যবহার করা রডটি।
পিবিআইএ’র হাতে আটককৃত আবদুল মালেক খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। মালেক শাহরাস্তি উপজেলার ঘুঘুশাল গ্রামের আবদুর রবের ছেলে। মালেক এলাকায় ছিঁচকে চোর হিসেবে পরিচিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খুনি গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় সস্তির নিঃশ্বাস আসে। এর আগে সন্দেহভাজন জিসেবে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ২জনকে আটক করে পুলিশ। সেই সময় মামলার তদন্তের স্বার্থে তখন পুলিশ কিছুই বলতে রাজি হননি।
স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুজন তালুকদার বলেন, মূলত মালেক এলাকার ছিঁচকে চোর। গত ২৯ জুন নাওড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবা কর্মকর্তা মো নুরুল আমিনের বাড়িতে চুরির উদ্দেশ্যে ঢুকে। চুরি করার এক পর্যায়ে মালেক ধরা পড়ে গেলে নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী কামরুন নাহারের মাথায় আঘাত করে হত্যা করার চেষ্টা করে। এতে ঘটনাস্থলেই নুরুল আমিন মারা যায় এবং তার স্ত্রী কামরুন নাহারকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তিন দিন পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান তিনি।
সুজন তালুকদার আরো বলেন, পিবিআই প্রকৃত খুনিকে আটক করায় আমাদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। শুক্রবার রাতে পিবিআই মালেককে সাথে নিয়ে দম্পতির বাড়িতে হাজির হয়। ওই সময় মালেকের জবানবন্দির ভিত্তিতে পুকুর থেকে খুনে ব্যবহৃত রড উদ্ধার করা হয়।
এদিকে দম্পতি খুনের ঘটনায় আটক আব্দুল মালেকের প্রসঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য প্রদান করেনি পিবিআই। চাঁদপুর পিবিআই’র ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। এ ব্যাপারে পরে বক্তব্য দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রাম থেকে পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের নাওড়া গ্রামে বাড়ি তৈরি করে বসবাস করে আসছেন মৃত আঃ মজিদের পুত্র নিহত নুরুল আমিন। তিনি ৫-৬ বছর আগে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় হতে অবসরে যান। তার স্ত্রী কামরুন নাহার পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে অবসরজনিত ছুটিতে ছিলেন। নিহত দম্পতির ১ পুত্র ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে।
গত ১ জুলাই দুপুরে নিজ বাড়ির ছাদ হতে নুরুল আমিনের (৬৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই সময় গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় স্ত্রী কামরুন নাহার (৬১) কে। ঘটনার দিন নিহত দম্পতির পুত্র মো. জাকারিয়া বাবু অজ্ঞাতদের আসামী করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।