চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে রাতে টহল দিতে গিয়ে ডাকাত দলের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে নৌ পুলিশের। এসময় ডাকাত দল নৌ পুলিশকে লক্ষ্য করে টেঁটা ছোঁড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষায় গুলি ছোঁড়ে। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ট্রলার নিয়ে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করে ডাকাত দল। এসময় বেশ কয়েকজন পালিয়ে গাঢাকা দিলেও বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্রসহ আটক হয় এক ডাকাত।
গত তিন দিন আগে জেলার মতলব উত্তরে মেঘনা নদীতে এমন ঘটনা ঘটে। তবে ওই ঘটনার পর বুধবার বিকেলে নদীতে ভাসমান অবস্থায় এক ডাকাতের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে নদীতে টহল দেওয়া নৌ পুলিশ।
নৌ পুলিশ, চাঁদপুর অঞ্চলের প্রধান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, নৌ পুলিশ নৌপথের নিরাপত্তা বিধানে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে রাত্রিকালীন যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল নির্বিঘ্ন করতে নিয়মিতভাবে টহল পরিচালনা করে থাকে নৌ পুলিশ।
এরই ধারাবাহিকতায় মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ি মেঘনা নদীতে টহল গিতে গিয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউনিয়ন সংলগ্ন মেঘনা নদীতে চাঁদপুরগামী একটি যাত্রীবাহী লঞ্চকে লক্ষ্য করে ইঞ্জিনচালিত একটি নৌকা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হতে দেখে নৌ পুলিশের সদস্যরা। এতে সন্দেহ হলে নৌ পুলিশ সদস্যরা উক্ত নৌকাটিকে চ্যালেঞ্জ করে। এতে ডাকাত দল নৌ পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে টেঁটা নিক্ষেপ করতে থাকে। সৌভাগ্যবশত টেটাগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে নৌ পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে শর্টগানের ফায়ার করলে ডাকাত সদস্যরা পানিতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে পালিয়ে যায়।
পুলিশ সুপার আরো জানান, এ সময় নৌ পুলিশ মো. দিদার হোসেন (২০) নামে একজন ডাকাতকে টেঁটাসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় এবং বুধবার মেঘনা নদী হতে খোরশেদ আলম (২৮) নামক এক ডাকাতের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ডাকাত দিদারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ডাকাতির প্রস্তুতির কথা স্বীকার করে এবং পালিয়ে যাওয়া ৬ সহযোগীর নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে। আটক হওয়া ডাকাত জানায়, সেসহ অন্যরা দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা-চাঁদপুর নৌ পথে চলাচলকারী লঞ্চে ডাকাতি করে আসছিল।
এদিকে, আটক ডাকাতের কাছ থেকে ১টি টেঁটা, ৪টি চাইনিজ কুড়াল, ১টি টর্চ লাইট, ১টি মোবাইল ফোন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা জব্দ করা হয়।
অন্যদিকে, আসামিদের বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানায় ডাকাতির প্রস্তুতির মামলা রুজু করা হয়েছে এবং উদ্ধারকৃত লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।