বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্য ৩৮ হাজার ২৮৩ জন চাকরিপ্রার্থীর অবশেষে অপেক্ষার অবসান হচ্ছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখেই তাঁদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্কুল-কলেজগুলোয় অনেক শিক্ষকের পদ ফাঁকা। এ জন্য আমরা পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখেই তাঁদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গত পরশু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
কবে নাগাদ নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হতে পারে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য আমাদের সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি, তারা খুব দ্রুত নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করবে।’
এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের এই প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। এরপর মৌখিক পরীক্ষা হয় ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় গত বছরের ১৫ জানুয়ারি।

এনটিআরসিএ সূত্র আরও জানায়, ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্য থেকে স্কুল ও কলেজে শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত বছরের ৩০ মার্চ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। গণবিজ্ঞপ্তির আলোকে ৪ এপ্রিল আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় ৩০ এপ্রিল। গত ১৫ জুলাই ৩৮ হাজার ২৮৩টি পদে নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ৬০৭টি এমপিওভুক্ত পদ ও ৩ হাজার ৬৭৬টি নন-এমপিও পদে নিবন্ধিত প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়।
এর আগে দুটি গণবিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে দুই দফায় শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছে এনটিআরসিএ। ওই দুই গণবিজ্ঞপ্তিতে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে নিয়োগ পেয়েছেন প্রায় ৩৬ হাজার শিক্ষক।

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম যাচাই শেষে ওয়েবসাইটে সুপারিশপত্র প্রকাশ করা হবে। এরপর প্রার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন। সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীরা ২৫ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনটিআরসিএর ওয়েবসাইটে পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরম পূরণ করেন। তবে গত চার মাসেও শেষ হয়নি পুলিশ ভেরিফিকেশন। অবশেষে পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখেই তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টি ছিল না। পুলিশ ভেরিফিকেশন না থাকায় প্রথম গণবিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়।