অনলাইন ডেক্স :
ভারতকে দীর্ঘ সময় পর ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতিয়ে আন্তর্জাতিক ফরম্যাটটিকে বিদায় বলেছিলেন রোহিত শর্মা।
গত মার্চে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পর ওয়ানডেকেও তিনি বিদায় বলবেন বলে গুঞ্জন উঠেছিল। তবে আরেকটি ৫০ ওভারের বিশ্বকাপে খেলার আশা রয়েছে তার।
এরই মাঝে আচমকা টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ভারতীয় এই অধিনায়ক।
এর আগে জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের পরই রোহিত টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেবেন বলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছিল। তবে তিনি এখনই টেস্ট ছাড়বেন না বলে জানিয়ে দেন। এদিকে, চলমান আইপিএল শেষে ইংল্যান্ডের মাটিতে পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলতে যাবে ভারত। আসন্ন সিরিজকে কেন্দ্র করে রোহিতের কাঁধে টেস্ট দলের নেতৃত্বভার থাকা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কথা হচ্ছিল। ভারতীয় গণমাধ্যমে বলা হচ্ছিল, তরুণ কোনো ক্রিকেটারকেই টেস্ট অধিনায়ক করতে চায় বিসিসিআই।
সেই আলোচনার রেশ না কাটতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোহিত নিজের সাদা পোশাক তুলে রাখার কথা জানিয়ে দিলেন। ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্টোরিতে টেস্ট ক্যাপের একটি ছবি দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে অবসরের ঘোষণা দিয়ে লিখেছেন, ‘সবাইকে জানাতে চাই যে, আমি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিচ্ছি। সাদা পোশাকে আমার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা অনেক সম্মানের। বছরের পর বছর আমাকে ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতের প্রতিনিধিত্ব চালিয়ে যাব।’
এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক টেস্টে ১১ বছরের যাত্রা শেষ হলো রোহিতের। ২০০৭ সালে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হলেও, প্রথম টেস্ট ম্যাচ খেলেন ২০১৩ সালে। সবমিলিয়ে ভারতের হয়ে তিনি খেলেছেন ৬৭ টেস্ট, এর মধ্যে অধিনায়কত্ব করেন ২৪টিতে। ২০২২ সালে তিনি বিরাট কোহলির কাছ থেকে অধিনায়কত্ব পান। সাদা পোশাকে ৬৭ টেস্টের ১১৬ ইনিংসে ৪০ গড়ে ৪৩০১ রান করেছেন রোহিত। যেখানে ১২ সেঞ্চুরির সঙ্গে তার নামের পাশে রয়েছে ১৮টি অর্ধশতক।
রোহিত এমন সময়ে টেস্ট ক্রিকেট ছাড়লেন, যার আগে তার নেতৃত্বে ভারত ঘরের মাঠে ও অস্ট্রেলিয়ায় দুটি বাজে সিরিজ খেলেছে। তার জন্য বড় ধাক্কা ছিল ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হার। যা ছিল ১২ বছর পর নিজেদের মাঠে সিরিজ এবং ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমের পর হোয়াইটওয়াশের লজ্জা ভারতের জন্য। সেই সময় পুরো দলের সঙ্গে রোহিতও তীব্র সমালোচনার তিরে বিদ্ধ হয়েছেন। এরপর ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও ৩-১ ব্যবধানে হারে ভারত। যা তাদের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ছিটকে দেয়।
মূলত রোহিত-বুমরাহদের জন্য চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা কঠিন হয়ে যায় কিউইদের বিপক্ষে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হওয়ায়। ফলে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব সমীকরণ তৈরি হয়ে যায়। সেটি তো মেলাতে পারেইনি, উল্টো শেষ টেস্টে রোহিতকে ছাড়াই একাদশ সাজায় ভারত। শেষ দুই সিরিজে কেবল একবার ফিফটি পেরোনো ইনিংস খেলেন রোহিত, আর ৮ ম্যাচে গড় ছিল মাত্র ১০.৯৩।