ঢাকা, সোমবার, ২৮শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অসময়ের বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি মাঠ ॥ কৃষকের মাথায় হাত

নারায়ণপুর এলাকার ফসলি জমি থেকে পানি সরাচ্ছেন এক কৃষক।

স্টাফ রিপোর্টার : চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলাসহ মতলব দক্ষিণ উপজেলায় অসময়ের বৃষ্টির কারণে ফসলি মাঠের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অসময়ে টানা বৃষ্টিপাতে আলু, পেঁয়াজ, শরিষা, ধানসহ গবাদি পশুর খাবার খড় বিনষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বছর জুড়ে বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা সব মিলিয়ে বার বার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। নিম্নচাপের কারণে গত শনিবার থেকে মতলব দক্ষিণসহ দেশের বিভিন্ন বিভিন্ন এলাকায় অসময়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। গ্রামের প্রকৃত কৃষকদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে মাঠ থেকে পাকা ধান অনেকেই কাটতে পারেন নি। কেউ মাড়াই দিয়ে ধান বের করেছেন, কেউ মাড়াই দেবার অপেক্ষায় সময় গুণছেন। অগ্রহায়ণ মাসের শেষ সময়ে যখন কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কাটা ও ঘরে তোলা নিয়ে আনন্দের সময় কাটবেন ঠিক সেই সময়ে পাকা ধান নিয়ে অসময়ের টানা বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকরা। এই বৃষ্টির কারণে পাকা ধান গাছ মাটির সাথে মিশে যাবে এবং ব্যাপকহারে ধান নষ্ট হওয়ার উপক্রম আছে। ধান গাছের খড় নষ্ট হয়ে পশুর খাবার ব্যাহত হবে বলে জানান কৃষকরা। তাছাড়া জেলার মতলব দক্ষিণ, হাজীগঞ্জ, মতলব উত্তর ও ফরিদগঞ্জ বেড়িবাঁধ এলাকার কারণে শীতকালীন শাক-সবজির আবাদ ব্যাপকহারে করা হয়েছে। অসময়ে অবিরাম বর্ষণের কারণে আমন ফসল ও শাক-সবজির অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে বলে কৃষকরা জানান। মতলব দক্ষিণ উপজেলার কৃষক মিজান শেখ, মনির হোসেনসহ ক’জন কৃষক জানান, এখন আমন ফসল ঘরে তোলার এই সময়ে বৃষ্টিপাতের ফলে জমিতে থাকা ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়ছে। বৃষ্টির পানির সাথে গাছ থেকে ধান ঝরে পড়ছে। তাছাড়া নিচু জমিতে পানি জমায় ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের কৃষক মাহবুব, মিজান বলেন, টানা বৃষ্টিতে রোপিত আলুর মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। এছাড়া টমেটো, সরিষা, পিয়াজ, করোলা, ভটভটি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাল শাক, লাউ শাকসহ শীতকালীন শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বার বার ফসল ও সবজি ক্ষেতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এছাড়া ইরি-বোরো ধানের বীজতলা তৈরি কারক কৃষকরা জানান, বৃষ্টি আরো কয়েকদিন থাকলে তাদের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাবে। নতুন করে আবার হয়তো বীজতলা তৈরি করতে হবে। যার কারণে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে এবং বীজ সংগ্রহ করতে কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। চাঁদপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে যে গভীর নিম্নচাপটি বয়ে যাচ্ছে, তার কারণে আগামী ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তারপর আবহাওয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলেও মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে। আজ সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চাঁদপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: জালাল উদ্দিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে চতুর্দিকে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কাটা ধান ও আলুসহ শাক-সবজির ক্ষতি সাধন হচ্ছে। তবে বৃষ্টিপাত বন্ধ না হওয়ার কারণে ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরিভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ার পরে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সঠিকভাবে তথ্য দেওয়া যাবে।

 

সর্বশেষ - কৃষিমতলব দক্ষিণ

জনপ্রিয় - কৃষিমতলব দক্ষিণ